ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার জুড়ি মেলা ভার। ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, ত্বক ও চুলের উপকার সহ অনেক সমস্যা সমাধান করে থাকে।
তবে যে কোন খাদ্যভাস শুরু করার আগে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত। আপনি যদি ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম এবং ইসবগুল ও তোকমা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তো এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
সূচিপত্রঃ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা জানুন
- তোকমা দানার উপকারিতা সমূহ জানুন
- ইসবগুলের ভুসি কি বিস্তারিত জানুন
- ইসবগুলের ভুসির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
- ইসবগুলের ভুসি অপকারিত সমূহ জানুন
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- তোকমা দানা কি বিস্তারিত জানুন
- তোকমা দানার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
- তোকমা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ জানুন
- তোকমা খাওয়ার নিয়ম সঠিক ভাবে জানুন
- ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা একসাথে খাওয়ার নিয়ম
- লেখকের মন্তব্য
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা জানুন
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। ইসবগুলের ভুসি বা ইসবগুলের শাস, মূলত ইসবগুলের বীজের খোসা, একধরনের ফাইবারের উৎস। যা মানুষের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকেঃ
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে - ইসবগুলের ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক ভূমিকা রাখে। এর মিউসিলেজিনাসের কারণে আলসার জনিত পেট ব্যাথা অনুভূত হয়। ইসবগুলে পর্যাপ্ত অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার ফলে এর অদ্রবণীয় ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের মল নরম করে দেয় এবং খুব সহজেই ইলিমিনেশন সম্ভব করে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে - ডায়রিয়া প্রতিরোধেও ইসবগুলের ভুসি অনেক ভূমিকা রাখে। ডায়রিয়া রোগীদের টনিক হচ্ছে ইসবগুলের ভুসি ও দই। এই উপাদান দুটি মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক যা পাকস্থলির ইনফেকশন সরাতে কাজ করে। এদিকে ইসবগুলের ভুসি তরল মলকে শক্ত করতে সাহায্য করে। এর ফলে ডায়রিয়া খুব দ্রুত সেরে ওঠে ।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে - ডায়রিয়া প্রতিরোধেও ইসবগুলের ভুসি অনেক ভূমিকা রাখে। ডায়রিয়া রোগীদের টনিক হচ্ছে ইসবগুলের ভুসি ও দই। এই উপাদান দুটি মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক যা পাকস্থলির ইনফেকশন সরাতে কাজ করে। এদিকে ইসবগুলের ভুসি তরল মলকে শক্ত করতে সাহায্য করে। এর ফলে ডায়রিয়া খুব দ্রুত সেরে ওঠে ।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে - ইসবগুলের ভুসিতে আছে জিলাটিন নামক একটি উপাদান। যা দেহে গ্লুকোজের শোষণ এবং ভক্সাগার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে। যার ফলে রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় না। সুতরাং নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।
হার্ট ভালো রাখে - ইসবগুলের ভুষিতে থাকা খাদ্যআঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে। এটি আমাদের পাকস্থলীর দেওয়ালে পাতলা স্তর সৃষ্টি করে এবং খাদ্য থেকে কেলেস্টেরেল শোষণে বাধা দেয়। এছাড়াও রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টরেল সরিয়ে দিতে কাজ করে।
গ্যাস্ট্রিকের সমেস্যা দূর করে - যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি সেবন করলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাবেন। ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার ফলে এটি পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে, যে কারণে অ্যাসিডিটির বার্ন থেকে পাকস্থলী রক্ষা পায়।
প্রসাবে জ্বালাপোড়া দূর করে - যাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার মাধ্যমে এ সমেস্যা সমাধান করতে পারেন। এ সমস্যা দূর করতে আখের গুড়ের সাথে মিশিয়ে খেলে বেশি ভালো উপকারিতা পাবেন। এটি সকাল ও বিকালে খেতে পারেন।
এছাড়াও হজমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি অনেক উপকারী।
তোকমা দানার উপকারিতা সমূহ জানুন
তোকমা দানার উপকারিতা রয়েছে অনেক। তোকমা দানা একটি পুষ্টিকর বীজ, তোকমা দানার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু প্রধান উপকারিতা হলোঃ
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে - তোকমাই প্রচুর পরিমাণ ডায়েটারি ফাইবার থাকে। এই ডায়েটারি ফাইবারের অনেক স্বাস্থ্য সুবিধার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করতে সাহায্য করে। সামান্য তোকমা অল্প পানিতে ভিজিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর তা দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও এটি হজমের সমস্যার সমাধান করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে - দেহের ওজন কমাতে এ বীজের জুড়ি নেই। তোকমার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ২০১৬ সালের একটি সমীক্ষা বলছে, সম্ভাব্য অ্যান্টি-ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে তোকমাই, যা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে - তোকমাই থাকা অ্যান্টিডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাপক কার্যকর। আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়া ধির করে দেয় তোকমা যার ফলে কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তরের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়। উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যের কারণে টাইপ- ২ ডায়াবেটিস তারা নিয়মিত তোকমা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
ত্বক ও চুলের উপকার করে - ত্বকের অকাল বার্ধক্য আটকাতে পারে তোকমা। তোকমার শরবত নিয়মিত খেলে ত্বক হয় স্বাস্থ্যউজ্জ্বল। রূপসজ্জায় ও তোকমার জুড়ি মেলা ভাড়। তোকমা বীজ গুঁড়ো করে নারিকেল তেলের সঙ্গে মাখিয়ে ত্বকে লাগাতে হয়। এটি নানা রকম চর্মরোগ,একজিমা ও সোরিয়াসিস নিরাময়েও কার্যকর। সুস্থ চুলের জন্য তোকমা নিয়মিত খেতে পারেন।
ঠান্ডা জনিত সমস্যা - তোকমা বীজে রয়েছে ঠান্ডা প্রতিরোধী উপাদান। সর্দি-কাশি থেকে দূরে থাকতে চাইলে আমাদের নিয়মিত তোকমা খাওয়া উচিত।
এসিডিটি দূর করে - তোকমা এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে তোকমা পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর খেতে হবে।
এছাড়াও, তোকমা হজমের সমস্যা সমাধানে, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে, আর্থ্রাইটিসের প্রদাহ কমাতে তোকমার জুড়ি মেলা ভার।
ইসবগুলের ভুসি কি বিস্তারিত জানুন
ইসবগুল (বৈজ্ঞানিক নামঃ Plantago ovata) এটি হচ্ছে Plantaginaceae পরিবারের Plantago গনের একটি উদ্ভিদ। এর ইংরেজি নামঃ (blond psyllium, ispaghu)। ইসবগুল বাংলায় উচ্চারণগত হবে “ইশবগুল” এবং বানানে “ইসবগুল” হয়ে থাকে। বিদেশি বাজারগুলোতে ইসবগুল কে “সিলিয়াম হাস্ক” হিসেবে চিনে থাকে। ইসবগুলের ভুসি মূলত এক প্রকার দ্রবণীয় ফাইবার যা সাইলিয়াম “প্ল্যান্টাগো ওভাটা” বিজের খোসা। এটি রেচক বা ল্যাক্সেটিভ হিসেবেও পরিচিত।
ইসবগুল আদি বাসভূমি ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে বেশি পাওয়া যায়। ইসবগুল একটি ছোট গাছ যা সাধারণত গরম ও শুষ্ক আবহাওয়াতে জন্মায়। ইসবগুল ভারত, পাকিস্তান এবং ইরানে বেসি চাষ করা হয়। ইসবগুল গাছের বীজ সংগ্রহ করা হয় এরপর বীজগুলোকে প্রক্রিয়া করে ভুসি আলাদা করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বীজের বাইরের স্তরটি আলাদা করা হয় যা ফাইবারের একটি প্রধান উৎস। ভুসি সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয় যাতে তা সঠিক মানের হয় এবং কোন অশুদ্ধি না থাকে।
পরিশোধিত ভুসি প্যাকেজিং এর জন্য প্রস্তুত করা হয় এবং সাধারণত পাউডার হিসেবে তা বিক্রি করা হয়। ইসবগুলের ভুষি জলীয় পরিবেশে ফুলে গিয়ে একটি জেলি জাতীয় পদার্থ তৈরি করে, যা খাওয়ার পর পেটে গিয়ে প্রোটিনের মতো কাজ করে এবং সহজে পেট পরিষ্কার সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকে।
ইসবগুলের ভুসির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
১ টেবিল চামচ (প্রায় ১৩ গ্রাম) ইসবগুলের ভুসির পুষ্টিগুণ হলোঃ
- ক্যালোরি ৫৩%
- ফ্যাট ০%
- সোডিয়াম ১৫মিলিগ্রাম
- শর্করা ১৫ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম
- আইরন ০.৯ মিলিগ্রাম
ইসবগুলের ভুসি অপকারিত সমূহ জানুন
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা এর পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও রয়েছে। উপকারিতার দিকগুলো জানার পাশাপাশি আমাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিকগুলোও জানা জরুরী। আপনি যদি প্রথম অবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খান বা যতোটুকু খাওয়ার প্রয়োজন এর বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে যেমনঃ
- পেট ব্যাথা হওয়া।
- বমি বমি ভাব হওয়া।
- শ্বাস কার্যের সমস্যা সৃষ্টি হওয়া।
- চুলকানি হওয়া ও চামড়ার মধ্যে লাল, লাল ফুসফুঁড়ি দেখা দেওয়া।
- হারাকনো ভাব সৃষ্টি হওয়।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু পরিপূর্ণ কার্জকারিতা পাওয়ার জন্য অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে। ইসবগুলের ভুসি অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির সঙ্গে খেতে হবে। এক গ্লাস পানিতে দুই চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেতে হবে। বড় এক গ্লাস অর্থাৎ (২৪০ মিলিলিটার) পানি বা শরবতের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে হবে। অন্ত্রের ভেতরে থাকাকালীন ইসুবগুলের ভুষি অনেক বেশি পরিমাণ পানি শোষণ করে।
যেহেতু ইসবগুলের ভুসি কার্জকারি পক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অন্ত্র থেকে অনেক পানি শোষণ করে তাই, দুই চা চামচ ভুসি পানি, দুধ বা শরবতের সঙ্গে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই খেয়ে ফেলা ভালো। আমারা অনেক সময় জানতে চায় খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেলে কি হয় বা ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম ? ওজন কমাতে বা সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার জন্য, ইসুবগুলের ভুসির মিশ্রণের সঙ্গে ১-২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে।
তোকমা দানা কি বিস্তারিত জানুন
তোকমা দানার (বৈজ্ঞানিক নামঃ Hyptis Suaveolens) এটি Lamiaceae পরিবারের গুল্ম জাতীয় সু-পুষ্পক উদ্ভিদ। তোকমা দানার ইংরেজি নামঃ (Pignut বা Chan)। তোকমা শব্দটি বাংলা শব্দ। এটি “বিলাতি তুলসী” বা “গাঞ্জা তুলসী” নামেও পরিচিত। দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তোকমা শরবত পানীয় চাহিদা অধিক পরিমাণ রয়েছে। এটি আধিক চাষ করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। তোকমা দেখতে মূলত কালো ও গাঢ় বাদামি, অনেকটা লম্বাটে গোলাকার দানা হয়, অনেকটা চ্যাপ্টা চালের মত।
সেসাম উদ্ভিদ (তোকমা গাছ) এর ফুল ও ফল ধরার পর যখন শুকিয়ে যায়। তখন পাকা ফল সংগ্রহ করার সময় তা সাবধানে সংগ্রহ করা হয়। পাকা ফল থেকে ভালোভাবে বীজগুলো বের করে নেয়া হয়। সংগ্রহকৃত বীজগুলো পরিষ্কার করে শুকানো হয় যাতে সেগুলো দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। এভাবেই বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তোকমা বীজগুলো পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে শরবতের মধ্যে খাওয়া হয়, এটি বিশেষত গরমের দিনে বেশি জনপ্রিয় হয়।
তোকমা দানার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
১ টেবিল চামচ (প্রায় ১৩ গ্রাম) তোকমার পুষ্টিগুণ হলোঃ
- ক্যালোরি ৬০%
- ফাইবার ৭ গ্রাম
- প্রোটিন ২ গ্রাম
- চর্বি ২.৫ গ্রাম
- আয়রন ১.৭ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম ১৫৫ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ৪১ মিলিগ্রাম
তোকমা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ জানুন
তোকমা খাওয়ার অপকারিতা, প্রতিটি খাবারই পুষ্টিগুণসম্মত হলেও আমাদের অনিয়মে খাওয়ার জন্যই কিছু অপকারিতার সম্মুখীন হতে হয়। তেমনি তোকমার ও কিছু অপকারিতা রয়েছে চলুন সেগুল জেনে নিইঃ
যদি কোন গর্ভবতী মহিলা মাত্রা অতিরিক্ত তোকমা খায় সে ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে থাকা ইস্ট্রোজেন হরমোনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত তোকমা খাওয়ার ফলে এই ইস্ট্রোজেন হরমোনটির মাত্রা কমে যেতে পারে।
যদি আমরা ছোট শিশুদেরকে তোকমা খাওয়াই সেক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেহেতু ছোট শিশুর পেটে খুব বেশি পরিমাণ বিপাকীয় ক্ষমতা থাকে না তাই এর উপকারের থেকে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এছাড়াও ছোট শিশুদের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তোকমা খাওয়ার নিয়ম সঠিক ভাবে জানুন
তোকমা খাওয়ার নিয়ম নিয়ে নানা কথার প্রচলন রয়েছে। অনেকের মনে পশ্ন থাকে খালি পেটে তোকমা খাওয়ার নিয়ম বা ওজন কমাতে তোকমা খাওয়ার নিয়ম? উভয় ক্ষেত্রেই তোকমা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাওয়া উত্তম। ১-২ চামচ তোকমা ২৫০ গ্রাম পানি বা ১ গ্লাস পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে হবে। চিনি ছাড়া খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় তবে চাইলে আপনি চিনি যোগ করতে পারেন।
তোকমা দানার মিশ্রণে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তোকমা দানাগুলো বাদামের সাথে ব্লেন্ডার করেও খাওয়া যাই, এতে করেও শরীরের অনেক উপকার হয়। এছাড়াও তোকমা দানাগুলো গুড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে সেখানে দুধ এবং মধু যোগ করেও খাওয়া যায়।
ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা একসাথে খাওয়ার নিয়ম
ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা একসাথে খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে আপনি যদি ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা একসাথে খেতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে আগে থেকেই তোকমা অল্প কিছু পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এরপর খাওয়ার পূর্বে ইসুবগুলের ভুসি যুক্ত করে ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে হবে। সকালে খালি পেটে বা রাতে খাবার গ্রহণের ৩০ মিনিট পর ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খেতে হয়। কারণ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা এগুলো হচ্ছে অনেক ভারি খাবার তাই এগুলা ভরা পেটে খাওয়া উচিত নয়।
গ্রীষ্মকালে ও রমাদান মাসে তোকমার বেশি জনপ্রিয়তা দেখা যায়। ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা নিয়ম মেনে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো সহ অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। কিন্তু এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে এজন্য অবশ্যই নিয়ম মেনে পরিমাণ মতো ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়া উচিত।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করছি ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়া সঠিক নিয়ম এবং ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা সম্পর্কে এই পুরো আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে সক্ষম হয়েছেন। অবশ্যই মনে রাখবেন অসুস্থ হলে সুস্থতার জন্য শুধু খাবারই যথেষ্ট নয়। আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে ডাক্তারের দেওয়া সঠিক খাদ্যনীয়ম ও জীবনধারা অব্যাহত রাখলেই কেবল আপনি উক্ত খাবারের সঠিক উপকারিতা ভোগ করতে পারবেন।
যদি এই আর্টিকেলের বিষয়ে আপনার মাঝে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারবেন। “ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা” এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সহ অন্যান্য ক্যাটাগরির আপডেট আর্টিকেল গুলো পড়তে RIPONTECH24 ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
RIPONTECH24 এর নীতিমালা মেনে আমাদের ওয়েব সাইটে আপনার মূল্যবান কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনাদের প্রতিটি কমেন্টের রিভিউ করে থাকি ।
comment url