ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে
থাকেন। কারণ প্রেগনেন্সির দীর্ঘ একটি যাত্রা শেষ হয় সন্তান প্রসবের মধ্য দিয়ে।
শেষের সপ্তাহের দিকে এসে মায়েরা অপেক্ষায় থাকে তাদের সন্তান জন্মের।
সন্তান ডেলিভারিতে ৩৮ সপ্তাহের পর মায়েরা ডেলিভারি পেইন ওঠার প্রস্তুতি নিতে
পারেন। প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য কোন করণীয় আছে কি জানাতে চান
অনেকেই। চলুন জেনে নেই ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ ও পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই গুগলে এ সার্চ করে থাকেন।
প্রতিটি মেয়ের জন্য জীবনে সবচেয়ে বড় এটা আনন্দের মুহূর্ত হচ্ছে সন্তান জন্ম
দেওয়া। সন্তান জন্মের সময় অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যে কারণে অনেক সময়
সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু আপনি যদি
প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারির জন্য পেইন উঠানোর উপায় গুলো সম্পর্কে অবগত থাকেন, তাহলে
সন্তান জন্মে সিজারের প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশই কমে আসবে।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর ১০টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন-
ক্যাস্টর অয়েল - প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ক্যাস্টর অয়েল জরায়ুর মুখ নরম করে এবং
নরমাল ডেলিভারি পেইন উঠাতে সাহায্য করে থাকে। অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাস্টর
অয়েল ব্যবহার ক্ষতির কারণ হতে পারে।
মসলাযুক্ত খাবার - আপনার যদি ৩৯ সপ্তাহ সময় পরেও প্রাকৃতিক
ডেলিভারি পেইন না উঠে, তাহলে মসলাযুক্ত খাবার খেতে পারেন। এটি প্রাকৃতিক
ডেলিভারি পেইন উঠাতে অনেক ভূমিকা পালন করে। তবে অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার
এড়িয়ে চলা উচিত।
ব্যায়াম - ঝুঁকিমুক্ত সুস্থগর্ভাবস্থার জন্য ব্যায়ামের গুরুত্ব
অপরিসীম। প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠাতেও ব্যায়াম হতে পারে অনেক
উপকারী বিষয়। একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটা
উচিত।
যৌন মিলন - সহবাস প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠাতে অনেক ক্ষেত্রে
নিরাময়ক হিসেবে কাজ করে। সহবাসের ক্ষেত্রে অনেক সময় অক্সিটোনিস হরমোন নিঃসরণ
হয়, যা প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য প্রয়োজন।
খেজুর - পুরো গর্ভাস্থা জুড়েই শক্তিবর্ধক খাবার হিসেবে খেজুরের
গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে খেজুর খাওয়ার ফলে জরায়ুর
মুখ নরম করতে এবং প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠাতে অনেক কার্যকর।
আকুপাংচার এবং আকুপ্রেশার - আকুপাংচার এবং আকুপ্রেশার এর মাধ্যমে
অনেকটাই স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠানো সম্ভব। তবে মনে রাখবেন
সময়ের আগে কখনোই ডেলিভারি পেইন উঠানোর চেষ্টা করা উচিত নয়। এতে আপনার
সন্তানের অপুষ্টি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মানসিক প্রস্তুতি - মানসিক প্রস্তুতি আপনার প্রাকৃতিক ডেলিভারি
পেইন উঠানোর জন্য অনেক বেশি উপকারে আসবে। মানসিক প্রস্তুতির জন্য
মেডিটেশন, ইয়োগা বা শ্বাস প্রশ্বাসের অনুশীলন করতে পারেন।
স্তনের বোঁটা ম্যাসাজ - আপনার প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠানোর
ক্ষেত্রে স্তনের বোঁটা ম্যাসাজ অনেকটা কাজে আসে। আপনার স্তনের বোঁটা
ম্যাসাজে সার্ভিক্স এর মুখ খুলে দেয় বা বড় করে দেয় যা প্রাকৃতিক
ডেলিভারি পেইন উঠাতে কার্যকর।
পুষ্টিকর খাবার - পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আপনার শিশুর
স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং আপনার প্রাকৃতিক ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য প্রস্তুত
করে তুলবে।
চিকিৎসকের মাধ্যমে - চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার মাধ্যমে আপনার
ডেলিভারি পেইন উঠানোর ক্ষেত্রে অনেক উপকারিতা আসে। আপনার প্রাকৃতিক
ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য চিকিৎসক বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট ও ব্যায়াম প্রয়োগ করে
থাকে। এখন ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ গুলো সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই।
ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ গুলো জেনে নিন
ডেলিভারি পেইন এর লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য
অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সন্তান জন্মের আগ মুহূর্তে মায়ের চিন্তা আরো ঘনিয়ে আসে
কখন ডেলিভারি পেইন শুরু হবে বা ডেলিভারি পেইনের লক্ষণ গুলো কি। তাই একজন মায়ের
ডেলিভারি পেইনের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা উচিত। ডেলিভারি পেইনের
লক্ষণগুলো অনেকের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে, তবে প্রায় সবার ক্ষেত্রেই দেখা
যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ গুলো সম্পর্কে চলুন জেনে নেই।
গর্ভের সন্তান নিচের দিকে নামা - আপনার গর্ভের সন্তান যদি আস্তে
আস্তে নিচের দিকে নামে তাহলে বুঝবেন আপনার ডেলিভারি পেইনের সময় অতি নিকটে
চলে আসছে।
স্রাব নিঃসৃত হওয়া - আপনার ডেলিভারি সময় ঘনিয়ে এলে
আপনার জরায়ুর মুখ বড় হয়ে যায়, এ সময় যোনি থেকে
স্রাব নিঃসৃত হয়। এটি প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কিছু আগেও হতে
পারে।
পিঠে ব্যথা অনুভব - আপনি ডেলিভারি সময়ের আগ মুহূর্তে পিঠে ব্যথা
অনুভব করতে পারেন। যদিও পুরো গর্ভাবস্থায় জুড়ে পিঠে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক,
কিন্তু ডেলিভারির আগ মুহূর্তে এই ব্যাথার তীব্রতা কিছুটা বাড়তে পারে।
ওয়াটার ব্রেক - ডেলিভারি পেইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হচ্ছে
ওয়াটার ব্রেক যদিও এটি অনেকের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের পরেও হতে পারে।
রক্ত মিশ্রিত স্রাব দেখা যাওয়া - সাধারণত গর্ভাবস্থায় শেষের
দিকে জরায়ুর মুখ নরম ও পাতলা হয়ে যায় যাতে এই সময়ে রক্ত মিশ্রিত স্রাব
দেখা দিতে পারে।
জরায়ুর মুখ প্রসারিত হওয়া - গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে জরায়ুর
মুখ প্রসারিত ও নরম হতে দেখা যায়।
ক্রাম্প শুরু হওয়া - ব্র্যাক্সটন হিকস কন্ট্র্যাকসন এমন
ক্রাম্প দেখা দেওয়া, যা সাধারণত আপনার গর্ভাবস্থার শেষের দিকে
দেখা দিয়ে থাকে।
ঘনঘন মলমূত্র ত্যাগ বা বমি বমি ভাব - আপনার গর্ভপাতের
সময়ের আগে প্রায়শ আপনি বাথরুমে যেতে পারেন। অনেকের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব
প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
পেটে তীব্র টান ও ব্যথা অনুভব হওয়া - প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হলে
সাধারণত পেটের তীব্র টান ও ব্যথা অনুভব হয়। কত সময় সময় পর পর ব্যথা
হচ্ছে বা ব্যথার প্রবণতার বিষয়টি লক্ষ্য রাখা উচিত।
কোমর ব্যথা - পেটে তীব্র টান বা ব্যথার সাথে যদি কোমর ব্যথাও
লক্ষ্য করেন, তাহলে মনে করবেন এটি আপনার সন্তান প্রসবের একটি বিশেষ
লক্ষণ। ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য বা সুস্থ ডেলিভারির জন্য
আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া আমাদের সব থেকে বড় সম্বল। চলুন জেনে
নেই ডেলিভারি পেইন উঠানো দোয়া।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর দোয়া
ডেলিভারি পেইন উঠানোর দোয়া বা আমল সম্পর্কে জানার জন্য অনেকে ইচ্ছা পোষণ
করে থাকেন। একজন নারীর জীবনের সবথেকে বড় আনন্দের সময় তার সন্তান পৃথিবীতে
ভূমিষ্ঠ হওয়া। অনেক সময় বিভিন্ন জটিলতার কারণে আমাদের সিজারের মাধ্যমে
সন্তান জন্মদান করার প্রয়োজন পড়ে। সবাই চাই যেন তার প্রাকৃতিকভাবে নরমাল
ডেলিভারি হয়। নরমাল ডেলিভারির জন্য আমরা আল্লাহর কাছে কিছু আমল ও
দোয়া করতে পারি চলুন জেনে নেই সেগুলো সম্পর্কে।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য বা সুস্থ ভাবে নরমাল ডেলিভারির জন্য আমরা আল্লাহর
গুণবাচক নাম "আল-মুবদিয়ু ও আল-মুতাআলি" নামের জিকির করতে
পারি। উক্ত আমল করার মাধ্যমে আল্লাহর রহমতে আমাদের গর্ভের সন্তান সুস্থ
থাকবে এবং সুস্থ ও নরমাল ডেলিভারি সহজ হয়ে উঠবে। এছাড়াও অনেক
আলেমগণের মতে, পবিত্র কোরআন থেকে সূরা রাদের ৮নং আয়াত, সুরা ফাতির ১১নং আয়াত,
সূরা নাহাল ৮৭নং আয়াত এবং সূরা যিলযাল পরে গর্ভবতী মাকে ফু দেওয়ার পরামর্শ
দিয়ে থাকেন।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর ইনজেকশন
ডেলিভারি পেইন উঠানোর ইনজেকশন সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থা
হল একজন মেয়ের জন্য জীবনের সবথেকে আনন্দময় মুহূর্ত। গর্ভাবস্থায় শুরু
থেকে সন্তান জন্ম পর্যন্ত এই সময়টা একজন মেয়ের জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় সঠিক পুষ্টিকর খাবার এবং সঠিক নিয়ম কানুন মেনে চলা
উচিত। সন্তান জন্মের ঠিক আগে ডেলিভারি পেইনের লক্ষণ বা ডেলিভারি পেইনের জন্য
কোন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় এমন প্রশ্ন প্রায় সবার মনেই হয়ে থাকে।
আমরা সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে বা ডেলিভারি পেইন লক্ষণ দেখা দিলে
ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারি। তারা আমাদেরকে ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে আমাদের নরমাল
ডেলিভারিতে হেল্প করবে। ডেলিভারি পেইন উঠানোর সময় ডাক্তাররা অক্সিটোনিস ইনজেকশ ব্যবহার করে থাকে। যা সন্তান প্রসবের পরেও রক্তপাত কমাতেও
ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি গর্ভাবস্থা শেষ করতে অন্যান্য ওষুধ বা পদ্ধতির সাথেও
ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডেলিভারি পেইন না উঠার কারণ
ডেলিভারি পেইন না উঠার কারণ গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই ৩৭ থেকে ৪১ সপ্তাহ গর্ভাবস্থার মাঝে সন্তান জন্ম হয়। যদি এই
সময়ের বেশি হওয়ার পরেও ডেলিভারি পেইন উঠার কোন লক্ষণ প্রকাশ না পাই, তাহলে
অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।খুব কম ক্ষেত্রেই ৫ থেকে ১০ শতাংশ
গর্ভাবস্থায় এমন বিলম্বনা হওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। এখন প্রশ্ন হল
এমন সমস্যা বা ডেলিভারি পেইন না ওঠার কারণ কি।
সাধারণত ৪১ সপ্তাহ গর্ভাবস্থা পরেও সন্তান জন্ম না হওয়া বা ডেলিভারি পেইন
না ওঠার সমস্যাকে পোস্ট টার্ম সমস্যা বলা হয়। এই সমস্যার মূলত কারণ হচ্ছে বেশি
বয়সে গর্ভধারণ করা। অনেকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বয়সে প্রথম গর্ভধারণে এ
সমস্যা দেখা দেয়। আবার গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত ওজনের কারণেও এই সমস্যা দেখা
দিতে পারে। ফ্যামিলি গত পোস্ট টার্ম সমস্যার জন্যেও অনেকের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা
দেখা দিতে পারে। প্রতিকার হিসেবে ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় গুলো মেনে চলতে
পারেন।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয়
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয় বিষয়গুলো জেনে রাখা আমাদের জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রত্যেকটি মাই চাই তার যেন একটি সুস্থ, সুন্দর সন্তান নরমাল
ডেলিভারির মাধ্যমে পৃথিবীতে আসুক। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো বিভিন্ন জটিলতার
কারণে আমাদের সিজারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু নিয়ম মেনে সঠিক জীবনযাত্রার
মাধ্যমে আমাদের নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব। চলুন জেনে নেই নরমাল ডেলিভারি হওয়ার
জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য প্রেগনেন্সি হতে হবে পূর্ব পরিকল্পিত। এক্ষেত্রে
জটিলতা অনেকাংশ কমে যাবে এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রিত থাকবে। এক্ষেত্রে গর্ভধারণের তিন
মাস আগে থেকে গাইনোকোলজিস্টের শরণাপন্ন হলে শারীরিক অবস্থা বোঝা যায়। নরমাল
ডেলিভারির ক্ষেত্রে সঠিক বয়সে গর্ভধারণের বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েদের
গর্ভধারণের উপযুক্ত বয়স হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ বছর।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার ক্ষেত্রে বিএমআই অর্থাৎ উচ্চতা এবং ওজন অনেক
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার মাধ্যমে
এন্টিনেটাল চেকআপ, প্রেসার, হিমোগ্লোবিন, ব্লাড সুগার, বাচ্চার মুভমেন্ট, বাচ্চার
ওজন বৃদ্ধি সবকিছু পর্যবেক্ষণে রাখা নরমাল ডেলিভারির জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ। একজন গর্ভবতী মায়ের নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য নিয়মিত
ব্যায়াম করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় সম্পর্কে সচারচার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ কি খাবার খেলে নরমাল ডেলিভারি হয়?
উত্তরঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য অবশ্যই পুষ্টিকর শাকসবজি ও
ফলমূল খাওয়া উচিত। মসলাযুক্ত খাবার নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে উপকারে আসে তবে
অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রশ্নঃ বাচ্চার জন্য কোন ডেলিভারি ভালো?
উত্তরঃ বাচ্চা প্রসবের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক বা নরমাল ডেলিভারি সবচেয়ে
ভালো। এটি সাধারণ, কম খরচ ও সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। নরমাল
ডেলিভারি সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৮ থেকে ৪১ সপ্তাহের মধ্যে হয়।
প্রশ্নঃ লেবার পেইন কত সপ্তাহে উঠে?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় শেষ দিকে অর্থাৎ এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে লেবার
পেইন হতে পারে। লেবার পেইন সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৮ থেকে ৪১ সপ্তাহে
দেখা যায়।
প্রশ্নঃ কত সপ্তাহে নরমাল ডেলিভারি হয়?
উত্তরঃ বেশিরভাগ মায়েদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা ৩৮ থেকে ৪১ সপ্তাহের
হয়ে থাকে। আপনি কখন সন্তান জন্ম দিবেন এটি একেবারে সঠিক সময় জানার কোন
উপায় নেই।
প্রশ্নঃ নরমাল ডেলিভারির পর কোন ফল খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ কমলালেবু, বাতাবি লেবু বা ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলো
সন্তান জন্মের পর বেশি প্রয়োজন। কারণ গর্ভবতী মহিলাদের থেকে স্তন্যদানকারী
মায়েদের বেশি ভিটামিন সি এর প্রয়োজন হয়।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার আগের লক্ষণ
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার আগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকে বিভিন্ন
সমস্যার সম্মুখীন হন। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার আগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা
আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নরমাল ডেলিভারি বলতে সাধারণত যনিপথে সন্তান
প্রসবকে বোঝায়। নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রসব বেদনার তিনটি পর্যায়ে
থাকে। প্রথম পর্যায়ে হচ্ছে পানিভাঙ্গা, দ্বিতীয় পর্যায় গর্ভাশয় খুলে যাওয়া
এবং তৃতীয় পর্যায় শিশুর জন্ম ও গর্ভফুল বের হয়ে আসা।
নরমাল ডেলিভারি বা সন্তান প্রসব হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে যে লক্ষণ গুলো প্রকাশ
পেয়ে থাকে তা হল- ঘন ঘন জরায়ু সংকোচন অনুভব, রক্ত মিশ্রিত স্রাব
নিঃসরণ, পেট ও পিঠের নিচের দিকে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, বাচ্চা নিচের
দিকে নামতে থাকা, পানি ভাঙ্গা। অনেকের ক্ষেত্রে পিঠের ব্যথা তীব্র হতে
থাকে, পেসিতে টান লাগে এবং বারবার মলমূত্র ত্যাগের প্রয়োজন
পড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো ভিন্নতা হতে পারে।
নরমাল ডেলিভারি কতদিনে হয় জেনে নিন
নরমাল ডেলিভারি কতদিনে হয় এ বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই সঠিকভাবে না জানার কারণে
বিভিন্ন সময় চিন্তিত হয়ে পড়ে। চলুন জেনে নেই নরমাল ডেলিভারি কত দিনে হয়,
সাধারণত নরমাল ডেলিভারি ৩৮ থেকে ৪১ সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে। যদি এই সময়ের আগে ডেলিভারি পেইন দেখা দেয় তাহলে অপুষ্ট
সন্তান জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন কম বা অনিয়মিত
খাবার গ্রহণের কারণে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আর ৪১ সপ্তাহ গর্ভাবস্থা পরেও যদি ডেলিভারি পেইন না উঠে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের
শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ৪১ সপ্তাহ গর্ভাবস্থার পরেও ডেলিভারি পেইন দেখা না দিলে
সাধারণত এটাকে পোস্ট টার্ম সমস্যা বলা হয়ে থাকে। ৫ থেকে ১০ শতাংশ গর্ভবতীদের
ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেখা দেয়। পোস্ট টার্ম সমস্যার মূল কারণ গর্ভাবস্থায়
অতিরিক্ত ওজন। এছাড়াও যাদের পারিবারিক জিনগত পোস্ট টার্ম সমস্যা রয়েছে
তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেখা দেয়।
ডেলিভারি পেইন বা প্রসব যন্ত্রণা নারীদের জন্য একটি প্রাকৃতিক
প্রক্রিয়া। প্রতিটি মেয়ের জীবনে সব থেকে বড় স্বপ্নের ও সুখের দিন তার
সন্তান পৃথিবীতে আসার দিন। সন্তান জন্ম নেওয়ার সাধারণত দুটি পদ্ধতি রয়েছে,
নরমাল ডেলিভারি বা সিজার। অনেক ক্ষেত্রে কিছু জটিলতার সম্মুখীন হয়ে সিজারের
প্রয়োজন হয়। তবে নরমাল ডেলিভারিতে রয়েছে অনেক গুরুত্ব এতে মায়ের এবং শিশুর
স্বাভাবিক সমস্যা কম হয়।
আশা করি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় ও ডেলিভারি
সম্পর্কে সমস্ত বিষয় গুলো বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। এই পোস্টটি
সম্পর্কে আপনার কোন মতামত বা জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে
পারেন। সুস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, লাইফস্টাইল, অনলাইন ইনকাম সহ অন্যান্য
ক্যাটাগরির আপডেট আর্টিকেলগুলো পড়তে আমাদের হোম পেজটি ভিজিট করতে পারেন।
RIPONTECH24 এর নীতিমালা মেনে আমাদের ওয়েব সাইটে আপনার মূল্যবান কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনাদের প্রতিটি কমেন্টের রিভিউ করে থাকি ।
comment url