গরুর কলিজা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান অনেকেই। আমরা ভোজন রসিক বাঙ্গালীদের অন্যতম প্রিয় একটি খাবার গরুর কলিজা। কলিজাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন যা আমাদের দেহে রক্ত তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও কলিজাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ও আমিষ, যা দেহের শক্তি উৎপাদনে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধে ভূমিকা পালন করে। শিশু থেকে ৪০ বছর বয়সী সকলের খাবার তালিকায় কলিজা রাখা উচিত। চলুন জেনে নেই গরুর কলিজার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
পোস্ট সূচীপত্রঃ গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা ও আরো যা জানবেন
- গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
- গরুর কলিজার পুষ্টিগুণ জেনে নিন
- গরুর কলিজা খাওয়ার অপকারিতা
- গরুর কলিজা খেলে কি ওজন বাড়ে
- গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
- গরুর ফেপসা খাওয়ার উপকারিতা
- কলিজা সম্পর্কে সচারচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- ছাগলের কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
- মুরগির কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
- লেখকের মন্তব্যঃ গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নেই বিস্তারিত। গরুর
কলিজাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সেলেনিয়াম নামের উপাদান, যা নিয়মিত খাওয়ার কারণে
আমাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।গরুর কলিজায় থাকা আয়রন আমাদের শরীর সহজে শোষন
করতে পারে এবং আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদন করতে সহায়ক। যা আমাদের শরীরে অক্সিজেন
পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং বিভিন্ন রক্তস্বল্পতা জনিত রোগ থেকে রক্ষা
করে।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর কাঁচা সজনে পাতার উপকারিতা
গরুর কলিজা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের জয়েন্টের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট কিংবা কৃমির মত
বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। যেকোন ধরনের বড় অপারেশন বা গর্ভাবস্থায়
প্রচুর রক্ত ক্ষরণের পরে কলিজা খাওয়া অনেক উপকারী, কারণ কলিজা রক্ত তৈরিতে
বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কলিজায় থাকা জিংক আমাদের ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যা
যেমন- সর্দি, জ্বর, টনসিল সমাধানে ভূমিকা পালন করে। গরুর কলিজা ভিটামিন বি১২
এর একটি চমৎকার উৎস।
যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যক্রমে এবং রক্তকণিকার উৎপাদনে ভূমিকা
পালন করে। গরুর কলিজায় থাকা ভিটামিন এ আমাদের চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি ত্বক ও ইমিউন
সিস্টেমের সঠিক কার্যক্রমে সহায়তা করে। গরুর কলিজা আমাদের শরীরে শক্তি
উৎপাদনে, মস্তিষ্কের কার্যক্রমে এবং ডিএনএ সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখে।
গরুর কলিজার পুষ্টিগুণ জেনে নিন
গরুর কলিজার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকে গুগলে সার্চ করে থাকেন, তাদের সুবিধার্থে
আমরা গরুর কলিজার সব পুষ্টিগুণ নিয়ে নিচে একটি তালিকা তৈরি করেছি। গরুর
কলিজা আমাদের বাঙ্গালীদের জনপ্রিয় একটি খাবার। শিশু থেকে ৪০ বছর বয়সী
সকলের শরীরের জন্যই কলিজা একটি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান। গরুর কলিজায় থাকা
আয়রন ও জিংক আমাদের শরীরে রক্ত উৎপাদনের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে।
চলুন জেনে নেই প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর কলিজার পুষ্টিগুণ-
পুষ্টিগুণ | পরিমাণ |
---|---|
ক্যালরি | ১৭৫ ক্যালোরি |
প্রোটিন | ২৬.৫ গ্রাম |
চর্বি | ৫.৮ গ্রাম |
কোলেস্টেরল | ৩৮৮ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ৬.২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ১৬৫০০ Iu |
ভিটামিন বি ১২ | ৫৯ মাইক্রোগ্রাম |
ফসফরাস | ৩৮৭ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ৫ মিলিগ্রাম |
গরুর কলিজা খাওয়ার অপকারিতা
গরুর কলিজা খাওয়ার অপকারিতা না জানার কারণে হয়তো আমরা অতিরিক্ত মাত্রায় গরুর
কলিজা খাওয়ার ফলে অনেক সময় বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন
হই। গরুর কলিজা পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ায় কিছু
অপকারিতা সৃষ্টি হতে পারে, চলুন জেনে নেই বিস্তারিত। গরুর কলিজায় থাকে
প্রচুর পরিমাণ কোলেস্টেরল, যারা হৃদরোগের ঝুঁকিতে ভুগছেন তাদের জন্য অতিরিক্ত
কোলেস্টেরল গ্রহণ হতে পারে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
গরুর কলিজায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে, ভিটামিন এ অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ
করলে আমাদের মাথা ব্যথা, বমি, হাড়ের দুর্বলতা এবং লিভারের ক্ষতির মতো সমস্যা দেখা
দিতে পারে। এছাড়াও গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণ
ভ্রূণের বিকাশের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যারা ডাউট বা উচ্চ ইউরিক এসিডের
সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য গরুর কলিজা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এ সমস্যা বাড়ে
যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ মসুর ডাল খেলে কি মোটা হয় জেনে নিন সঠিক তথ্য
গরুর কলিজা প্রচুর আয়রন সমৃদ্ধ যদিও আয়রন আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় তবে
অতিরিক্ত আয়রন গ্রহণে আমাদের লিভার, হার্ট এবং অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করতে
পারে। কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে গরুর কলিজা এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
অনেকের ক্ষেত্রে আবার হজমের সমস্যা, ত্বকে ফুসকুড়ি বা শ্বাসকষ্টের মত লক্ষণও দেখা
দিতে পারে। গরুর কলিজা পরিমাণ মতো খাওয়া আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর হলেও অতিরিক্ত
মাত্রায় খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে।
গরুর কলিজা খেলে কি ওজন বাড়ে
গরুর কলিজা খেলে কি ওজন বাড়ে অনেকেই এই প্রশ্নটি নিয়ে দ্বিধায় থাকে, তাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি সঠিক তথ্য। গরুর কলিজা যা অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। শিশু থেকে ৪০ বছর বয়সি সকলের স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য গরুর কলিজা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গরুর কলিজা খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি? এই প্রশ্নের উত্তর হল হ্যাঁ, গরুর কলিজা খেলে আমাদের ওজন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে তা নির্ভর করে আমরা কিভাবে এবং কতটুকু পরিমাণে গরুর কলিজা খাচ্ছি তারওপর। গরুর কলিজা প্রোটিনে ভরপুর এবং এতে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্য উপকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ভিটামিন বি১২, আয়রন এবং জিংক এই ধরনের পুষ্টি আমাদের শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং পেশী গঠনে সহায়ক। তবে গরুর কলিজায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টরেল থাকে।
অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে আমাদের ওজন বাড়াতে পারে বিশেষ করে যদি সুষম খাদ্যের সাথে মিলিয়ে না খাওয়া হয়। তাছাড়া যারা কম শারীরিক পরিশ্রম করেন বা উচ্চ ক্যালরি গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গরুর কলিজা খেলে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেশি। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে আমাদের পরিমাণ মতো গরুর কলিজা খাওয়া উচিত এবং সঠিক খাদ্য অভ্যাস ও শারীরিক কার্যক্রম বজায় রাখা উচিত।
গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।
গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়া গর্ভবতী মা ও সন্তানের জন্য অনেক
উপকারি। গরুর কলিজা প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন বি১২, ফলেট এবং অন্যান্য পুষ্টি
উপাদানে সমৃদ্ধ যা গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভাবস্থায় আমাদের সন্তানের জন্য
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়রন গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে যা
আমাদের শারীরিক দুর্বলতা এবং ক্লান্তি থেকেও রক্ষা করে।
ভিটামিন বি১২ আমাদের নার্ভাস সিস্টেমের সঠিক কার্যক্রম এবং রক্তকণিকার উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা গর্ভাবস্থায় আমাদের সন্তানের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশেও সহায়ক এবং শিশু মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ডের সঠিক বিকাশেও সাহায্য করে। এছাড়াও গরুর কলিজায় থাকা উচ্চ প্রোটিন উপাদান গর্ভবতী মায়ের শারীরিক গঠন রক্ষায় এবং আমাদের শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
গরুর ফেপসা খাওয়ার উপকারিতা
গরুর ফেপসা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ। গরুর ফেপসা বা ফুসফুস যা পুষ্টিগুণের দিক থেকে অতুলনীয়। গরুর ফেপসা প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং কম ফ্যাট যুক্ত হওয়ায় আমাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। গরুর ফেপসাই প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে যা আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়ক এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে কার্যকর। গরুর ফেপসা বিশেষত ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ যা স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যক্রম এবং মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার উপকারিতা
এছাড়াও গরুর ফেপসায় থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের কোষের পুনর্গঠন ও মাংসপেশির
বিকাশে সহায়ক। গরুর ফেপসার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এর ক্যালরি কম, যা
আমাদের স্বাস্থ্য সচেতনায় আদর্শ খাবার হিসেবে ধরা হয়। যদিও গরুর ফেপসা
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, তবুও অতিরিক্ত ফেপসা খাওয়া উচিত নয়। এটি আমাদের শরীরে
কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে যা আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ।
কলিজা সম্পর্কে সচারচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ ডায়াবেটিস রোগী কি গরুর কলিজা খেতে পারবে?
উত্তরঃ গরুর কলিজায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল, যা
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস হৃদপিণ্ড বা পাকস্থলির জটিল কোন অপারেশনের পরে না
খাওয়াই উত্তম।
প্রশ্নঃ কলিজা কি কাজ করে?
উত্তরঃ কলিজা যকৃতে পিত্তরস উৎপন্ন করে, পিত্তরস এক ধরনের ক্ষারীয়
যৌগ যা আমাদের পরিপাকে সহায়তা করে।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কলিজা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় কলিজা খেলে গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর সঠিক
বিকাশে সাহায্য করলেও, অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতির
কারণ হতে পারে।
প্রশ্নঃ গরুর কলিজার কি কোলেস্টরেল আছে?
উত্তরঃ গরুর কলিজায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও
কোলেস্টেরল। বিশেষ করে কলিজা ও গুর্দায় কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকে।
প্রশ্নঃ কলিজা খেলে কি রক্ত হয়?
উত্তরঃ কলিজাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা আমাদের রক্তে
হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। কলিজা আমাদের শরীরে কোষে রক্ত
প্রবাহ ও বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ রাখে।
ছাগলের কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
ছাগলের কলিজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে
থাকেন।আমরা জানি কলিজা একটি অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার, যা আমাদের স্বাস্থ্যের
জন্য অনেক উপকারি।তেমনি ছাগলের কলিজাও অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, এতে রয়েছে
প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, ফলেট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সব
পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীরের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়ক।
ছাগলের কলিজা কম চর্বিযুক্ত হওয়াই এবং উচ্চমানের প্রোটিন সরবরাহ করে, যা আমাদের মাংসপেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছাগলের কলিজায় থাকা ভিটামিন এ আমাদের চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। ছাগলের কলিজায় থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কলিজায় থাকা আইরন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
মুরগির কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
মুরগির কলিজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। মুরগীর
কলিজা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাদ্য উপাদান, যা মুরগির মাংস থেকে বেশি পুষ্টি
সমৃদ্ধ। মুরগির কলিজাতে রয়েছে নানা রকম ভিটামিন, আইরন, ক্যালসিয়াম,
ফাইবার ও অনেক পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। মুরগির কলিজায় থাকা ফাইবার ও আয়রন
যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও মুরগির
কলিজায় থাকা ভিটামিন এ আমাদের দৃষ্টিশক্তি ও মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে।
মুরগির কলিজায় থাকা সেলেনিয়াম উপাদান আমাদের ক্যান্সার, হাঁপানি,
শ্বাসকষ্ট, কৃমি সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য
করে। মুরগির কলিজায় থাকা জিংক আমাদের সর্দি, জ্বর, কাশির জীবাণুর বিরুদ্ধে
প্রতিরোধ গড়ে তুলতেও অনেক কার্যকারী। এছাড়াও মুরগির মাংসে থাকা কোলাজেন
ওইলাস্টিন আমাদের শরীরে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য
করে। মুরগির কলিজা গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্যও অনেক উপকারী।
অ্যানিমিয়া রোগীদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়, ফলে তাদের শরীরে পর্যাপ্ত
রক্ত উৎপাদন হয় না, তাদের ক্ষেত্রে মুরগির কলিজা অত্যন্ত উপকারী একটি খাদ্য
উপাদান। আমাদের শরীরের ওজন ঠিক রাখতে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন। আর
বিশেষজ্ঞদের মতে মুরগির কলিজা পুষ্টিকর খাবারের অন্যতম একটি উৎস। মুরগির
কলিজায় থাকা জিংক ও আয়রন আমাদের চুলের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যা
আমাদের চুল পড়া সমস্যা দূর করতে ও চুল ঘন করতে অত্যন্ত কার্যকারী।
লেখকের মন্তব্যঃ গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
গরুর কলিজা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, প্রোটিন, আয়রন এবং ফলেট রয়েছে। যা আমাদের শরীরে
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে, গর্ভাবস্থায়
শিশুর সঠিক বিকাশে, চোখের ও ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায়, দেহের কোষ পুনর্গঠনে এবং
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত উপকারী উপাদান।
তবে অতিরিক্ত মাত্রায় গরুর কলিজা খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ
হতে পারে। অতিরিক্ত মাত্রাই খাওয়ার ফলে অনেক সময় এলার্জি, হাঁপানি,
শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকে ক্ষেত্রে আমাদের ওজন বৃদ্ধিতেও
দায়ী অতিরিক্ত মাত্রায় কলিজা। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে গরুর কলিজা
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন, এই পোস্টটি সম্পর্কে যেকোন প্রশ্ন বা মতামত
কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
RIPONTECH24 এর নীতিমালা মেনে আমাদের ওয়েব সাইটে আপনার মূল্যবান কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আপনাদের প্রতিটি কমেন্টের রিভিউ করে থাকি ।
comment url